সাইবার অপরাধ :
(Cyber Crime)
আমারা মাঝে মধ্যেই শুনে থাকি বড়ো দের কাছে , মোবাইলে বেশি ভুল ভাল কথা বলবে না কিংবা গুজব ছড়াবে না তা নাহলে জেলে যেতে হবে। কিন্তু কেন ? এটা তো অনলাইন ! এখানে যা ইচ্ছা তাই করা যায় ! তবে জেল কেন?
সাইবার অপরাধ হলো এমন এক প্রকার অপরাধ যা ভার্চুয়াল ভাবে করা হয়ে থাকে। কম্পিউটার, মোবাইল এগুলোর মাধ্যমে এই ধরনের অপরাধ করা হয়ে থাকে। এবং এর জন্য শাস্তি এর ব্যাবস্থাও রয়েছে। অনেকেই কেবল মনে করে থাকেন সাইবার অপরাধ মানে ব্যক্তি গত ডেটা চুরি এবং অনলাইন ব্যাংক জালিয়াতি কেবল এর আওতায় পড়ে। তবে এটা ঠিক যে এর আওতায় এগুলো অবশ্যই পড়ে, কিন্তু তাছাড়া এর পরিধি অনেক বড়ো।
যে সকল বিষয় গুলি এই সাইবার অপরাধ এর মধ্যে পড়ে সেগুলি হলো,
ফিশিং আক্রমণ বা Phishing attack :
মাছ ধরার মতোই কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তির ওপর টোপ ফেলে personal data জেনে নিয়ে সেই ব্যক্তিকে সর্বহারা করে দেয়। এই বিভাগে যে সমস্ত তথ্যগুলি hacker রা ব্যক্তিদের জিজ্ঞেস করে থাকেন, সেগুলো হলো যেমন- Email password, ATM কার্ড নম্বর, ব্যাংক account নম্বর ইত্যাদি তথ্য আমাদের থেকে নিয়ে নেয়।
যখন আমরা কোনো online shopping করে থাকি, এবং সেটা যদি আমরা সেই সাইটের কথা আগে পিছু না ভেবেই কেনাকাটা করি। এবং ATM নম্বর দিয়ে পেমেন্ট করি সেক্ষেত্রে আমাদের সেই নম্বর পেয়েই account নিয়ে জালিয়াতি করে থাকেন হ্যাকাররা। সেক্ষেত্রে কাউকে নিজের personal data এবং ব্যাংক এর কোনো ইনফরমেশন দেওয়া উচিত নয়। এবং কেউ বা কারা এরকম কোনো তথ্য যদি জানতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই সাইবার অপরাধের কাছে নালিশ জানাতে হবে।
ব্যক্তি পরিচয় কে নিয়ে অপব্যবহার :
(Misusing personal information)
কোনো ব্যক্তির নিজস্ব পরিচয় কে নিয়ে অপব্যবহার করা কোনো বেআইনি কাজে তা দণ্ডনীয় অপরাধ। এবং সেই ব্যক্তির ভুয়ো প্রফাইল তৈরি করলে তার ভুল ব্যবহার করা হয় অনেক ক্ষেত্রে এবং ফেসবুকে আমরা এগুলো দেখে থাকি এটিও একপ্রকার সাইবার ক্রাইম।
হ্যাকিং :
(Hacking)
অনলাইন জগতে এই হ্যাকিং শব্দটি সবচেয়ে বড়ো মাথা ব্যথার কারণ। কম্পিউটার এর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির সম্পূর্ণ তথ্য hacker নিজের কাছে সঞ্চিত করে। এবং পরবর্তী কালে সেই তথ্য গুলির অপব্যবহার করে থাকেন। যা সাইবার ক্রাইম এর আওতায় পড়ে।
ব্ল্যাকমেলিং :
(Blackmailing)
অনলাইনে কোনো ব্যক্তির গোপনীয় তথ্য ফাঁস করে দেওয়া। কিংবা সেই তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া। সবচেয়ে খারাপ একটি দিক এই সাইবার অপরাধ এর জগতে। এর জন্য অনেক ব্যক্তি আত্মহত্যার মতো বড়ো পদক্ষেপ নিয়ে ফেলে। তাছাড়াও মৃত্যুর হুমকি ইত্যাদির মতো ব্ল্যাকমেলিং মোবাইল কিংবা কম্পিউটার এর মাধ্যমে করে থাকলে, তা অবশ্যই সাইবার অপরাধ এর আওতায় পড়ে। এমন সময় অবশ্যই পুলিশি ব্যাবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
অনুমতি ছাড়া ভিডিও কিংবা অডিও কিংবা লেখা শেয়ার করা:
(Sharing copyright material)
অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু শেয়ার করার জন্য তা যাচাই করে নেওয়া উচিত। নাহলে ফাইনের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি হেফাজত পর্যন্ত হতে পারে। যেমন কোনো প্রোডাকশন হাউজ এর গান নিজের ভিডিয়ো তে ব্যবহার করা অপরাধ । সেক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট টাইমের ফরম্যাট থাকে। তার বেশি হলে কপিরাইট এর ফাইনের কিংবা শাস্তির আওতায় পড়তে হতে পারে। কিংবা কোনো সিনেমার ক্লিপিং ছড়ানো ইত্যাদি সাইবার ক্রাইম এর আওতায় পড়ে।
কোনো ব্যক্তি কে ছোটো করা অনলাইনে :
ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি মাধ্যম গুলিতে মিমের মাত্রা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এবং সেক্ষেত্রে যদি কোনো ব্যক্তি কে এর জালে ফাঁসানো হয়, সেটিও সাইবার অপরাধ। কোনো একজন সুনাম বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে প্রবল করা নিন্দাজনক।
মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ইত্যাদি বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে , তাদের ট্রোল করা আইনত অপরাধ। তাই যেকোনো প্রকার মন্তব্য করার আগে ভাবা অবশ্যই প্রয়োজন। বিশেষ করে অনলাইন মাধ্যমে।
সাইবার সন্ত্রাসবাদ :
(Cyber terrorism)
আধুনিক সন্ত্রাসবাদ এই সাইবার এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এবং বেড়ে চলেছে। বিগত কয়েক দশকে এর মাত্রা যথেচ্চ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন স্তরের সম্পর্কিত সরকারি তথ্য গুলি নিয়ে দেশের ক্ষতি করে থাকতে পারেন। তাছাড়া যদি দেশের ক্ষতি করার কথা বলে থাকেন, কিংবা আক্রমণ করবার পরিকল্পনা নিয়ে থাকেন সেই সম্পর্কে ভীতি সৃষ্টি করে থাকেন জনগণের কাছে, সেক্ষেত্রে তা খুবই কঠোরতম শাস্তির উপযুক্ত।
আরও বেশ কিছু ধরনের সাইবার অপরাধ এর পর্যায় লক্ষণীয়। তবে এই পর্যায় গুলি সবচেয়ে বেশি জানা প্রয়োজন। এবং অবশ্যই এরকম কিছু ঘটলে নিকটবর্তী সাইবার ক্রাইম বিভাগীয় থানার সাঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন।
- Sanny Bag
Comments
Post a Comment