Skip to main content

RIGHT TO INFORMATION (R.T.I.) in Bengali - তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত আইন

তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত আইন :

RIGHT TO INFORMATION (R.T.I.)

২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার প্রযোজ্য আইন এই তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত আইন বা আর. টি. আই. ২০০৫ সালের ১৫ই জুন কেবল জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ছাড়া সমগ্র ভারতবর্ষে লাগু হয়এই আইন। এই আইন অনুযায়ী ভারতবর্ষের প্রতিটি সাধারণ মানুষের অধিকার সরকারি দফতরের প্রতিটি তথ্য গুলি জানার। ইহার উদ্দেশ্য প্রত্যেক জন কর্ত্তৃপক্ষের কাজে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার উন্নতি ঘটানো, কেন্দ্রীয় তথ্য আয়োগ ও রাজ্য তথ্য আয়োগ স্থাপন এবং তত্সম্পর্কিত বা তত্সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি নির্দিষ্ট করা।



কিভাবে কাজ করে এই নিয়ম গুলি?


যেহেতু ভারতবর্ষের প্রতিটি সাধারণ মানুষ ট্যাক্স দিয়ে থাকেন কিংবা কর দিয়ে দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তার অধিকার যে সরকার দ্বারা সমস্ত তথ্য সঠিক ভাবে জানা। এবং সরকারি সমস্ত তথ্য গুলি জানা। এর মারফত জনগণ নিজেকে শক্তিশালী কিংবা ক্ষমতাবান বলে মনে করতেই পারেন। কর দেওয়ার জন্য তাদের কর বা ট্যাক্স গুলি কিভাবে সরকার ব্যবহার করছেন তা জানা জনগণের অধিকার। এবং সরকারকে প্রশ্ন করাও সেই অধিকারের মধ্যেই পরে থাকে।


এক্ষেত্রে দশটি নিয়মাবলি মেনে চলা হয়, অর্থাৎ জনগণ কোন কোন বিষয়ের ওপর প্রশ্ন তুলতে পারেন সরকারের কাছে সেগুলি হলো,


১) এমন কিছু তথ্য যা সংসদ বা বিধানসভাতে দেওয়া হয়ে থাকে তা জনগণের কাছেও দেওয়া যেতে পারে। তার দ্বারা স্কুলে শিক্ষকের না থাকা, আশেপাশের রাস্তা গুলোর বেহাল দশা, হাসপাতালে ডাক্তার এর সংখ্যা যথেষ্ট না হওয়া এবং ঔষধ না থাকা, কাজের নামে ঘুষ নেওয়ার, রেশন দোকানে রেশন না থাকা, প্রধানমন্ত্রীর খরচ, রাষ্ট্রপতি ভবনের খরচ, এই সমস্ত ক্ষেত্রে সমস্ত তথ্য সঠিক ভাবে জানার জন্য সরকারকে প্রশ্ন করা যেতে পারে। 


২) আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। কেবল সে ক্ষেত্রেই তিনি প্রশ্ন করতে পারেন।


৩) প্রত্যেকটি সরকারি দফতরের অত্যন্ত একজন অথবা তার বেশি PUBLIC INFORMATION OFFICER থাকা বাঞ্ছনীয়। এবং আবেদনকারীদের আবেদন দ্রুত কার্যকর করা এনাদের দায়িত্ব। 


৪) জনগণ তার তথ্য গুলি জানার জন্য যেকোনো মাধ্যমে চেয়ে থাকতে পারে। তা লিখিত কিংবা অলিখিত মাধ্যমে চেয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু তা আগে থেকেই মজুত থাকা উচিত।


৫) যতদিনের ইনফরমেশন সরকার দেখার অনুমতি দিয়ে থাকেন, সেটুকুই জনগণ দেখার সুযোগ পান।


৬) R.T.I. এ আবেদনের জন্য সরকার মাত্র ১০ টাকা ধার্য করেছেন। এবং BPL এর অন্তর্ভুক্ত যারা তাদের ক্ষেত্রে এই পরিষেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গ্রাহকরা পেয়ে থাকেন।


৭) আবেদনকারীরা এক্ষেত্রে cash , Demand draft কিংবা postal order এর মারফত বিল মেটাতে পারেন। তবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যারা আবেদন করে থাকেন, তাদের অনলাইনেই পেমেন্ট করতে হবে।


৮) তথ্য পাওয়ার জন্য ৩০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীকে তথ্য প্রদান করতে হবে। এবং সেক্ষেত্রে তার বেশি দিন সময় নেওয়া হলে CENTRAL INFORMATION COMMISSIONER এর কাছে আপিল করতে পারবেন।


৯) ৩০ দিনের পর যদি পুনরায় টাকা চাওয়া হয় কিংবা ডকুমেন্ট চেয়ে পাঠানো হয়, তবে সে ক্ষেত্রেও আবেদন করা যেতে পারে। 


১০) R.T.I. এর মধ্যে পরা সকল বিভাগ গুলি থেকেই তথ্যের আবেদন করা যায়, সে সকল বিভাগ গুলি হলো,


রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, সংসদীয় এবং বিধানসভা মন্ডল, পুলিশ মহকুমা, সেনা, সরকারি কার্যালয়, সরকারি হাসপাতাল,সরকারি টেলিফোন সংস্থা, সরকারি স্কুল ও কলেজ এবং সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত স্কুল ইত্যাদি এর আওতায় পড়ে। কিন্তু বেসরকারি স্কুল গুলো এর আওতায় পড়ে না তবে শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে সেই তথ্য গুলি ও পাওয়া যায়।


জনগণ যে সকল বিভাগ গুলিতে প্রশ্ন তুলতে পারেন না এমন তিনটি বিভাগ বর্তমান। সেগুলি হলো-


১) অন্য দেশের সাথে ভারতের জুড়ে থাকা নানান মামলা সম্পর্কে তথ্য দিতে সরকার দায়বদ্ধ নন।


২) কোনো প্রকার গোয়েন্দা বিভাগীয় সংস্থা, যার তথ্য সর্বজনীন হওয়ায় দেশের পক্ষে সমস্যাদায়ক এবং ঝুঁকিপূর্ণ, এই ধরনের তথ্য সরকার জনগণকে দিতে বাধ্য নন।


৩) বেসরকারি ক্ষেত্র গুলির যাবতীয় তথ্য R.T.I এর দ্বারা পাওয়া যায় না। তবে জানতে চাওয়া তথ্য গুলি সরকারি বিভাগের মাধ্যমে জানা সম্ভব।



R.T.I. এর ফর্ম ভরার প্রক্রিয়া:


এক্ষেত্রে এটি কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ নয়। লিখিত পত্রের মাধ্যমে কিংবা কম্পিউটারে টাইপ করে সাদা কাগজে । এবং রসিদের সাথে তা ডাক অফিসে জমা করলেই হবে । তাছাড়াও অনলাইনেও আর .টি .আই. পরিষেবা পাওয়া যায়। হিন্দি, ইংরেজী, বাংলা ছাড়াও যেকোনো ভাষায় ফর্ম গুলি ভরা যাবে।



এবং পেপারে যেগুলি লিখতে হবে সেগুলি হলো,


আপনি কোন প্রকার তথ্য জানতে চান এবং তার সময় কাল দিলেই হবে। কোনো ব্যক্তিগত বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না এক্ষেত্রে। তাছাড়া নিজের মোবাইল নম্বর এবং ঠিকানা দেওয়া প্রয়োজন।


এভাবেই R.T.I. নিজেদের কাজ করে চলেছেন। এবং জনগন বঞ্চিত হয়নি তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে।

                                 - Sanny Bag

Comments

Popular posts from this blog

Film production steps in bengali চলচ্চিত্র নির্মাণ কৌশলের ধাপ

 চলচ্চিত্র নির্মাণ কৌশলের ধাপ চলমান চিত্রই হলো চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের প্রভাব এবং প্রচার আধুনিক সমাজে যে কতটা তা না বললেও চলে। চলচ্চিত্র একপ্রকারের দৃশ্যমান বিনোদন মাধ্যম। যেখানে একসঙ্গে দৃশ্য ও শ্রাব্য দুটিই উপভোগ করা যায়। বিনোদন দুনিয়ায় সবচেয়ে দৃঢ় এবং বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যমের মধ্যে চলচ্চিত্রের স্থান শীর্ষে। এই চলচ্চিত্র শব্দটি এসেছে  চলমান চিত্র তথা 'মোশন পিকচার' থেকে। সাধারণত চলচ্চিত্রের ধারণা শুরু হয় ঊনবিংশ শতকের শেষ দিক থেকে। বাংলায় চলচ্চিত্রের প্রতিশব্দ হিসেবে ছায়াছবি, সিনেমা, মুভি বা ফিল্ম শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়।                   একটি চলচ্চিত্রের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যায় হলো চলচ্চিত্র নির্মাণ কৌশল। চলচ্চিত্র নির্মাণ হলো একটি প্রারম্ভিক পর্যায়। কারণ এই নির্মাণ কৌশলের ওপর ভিত্তি করেই একটি পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র তৈরি হয়। চলচ্চিত্র নির্মাণ হলো প্রচুর সময়, ধৈর্য আর অমায়িক পরিশ্রমের একটি পরিনতিমাত্র। একটি চলচ্চিত্র নির্মাণকে তিনটি স্তরে ভাগ করা যায়– ১) প্রি-প্রোডাকশন            ২) প্রো-প্রোডাকশন  ...

Dominant Paradigm in bengali - উন্নয়নের প্রভাবশালী দৃষ্টান্ত

 উন্নয়নের প্রভাবশালী দৃষ্টান্ত উন্নয়নের পশ্চিমা মডেল  ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে প্রাধান্য পেয়েছিল।  আধুনিকীকরণের দৃষ্টান্ত ১৯৪৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খুব শীঘ্রই উত্থিত হয়েছিল। "অনুন্নত দেশগুলিকে" তাদের আধুনিকায়নের মাধ্যমে এবং মুক্ত-বাজারের পদ্ধতির মাধ্যমে দারিদ্র্যের পরিস্থিতি থেকে বের করে আনা একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে উন্নয়নের কল্পনা করেছিল।  এই দৃষ্টান্তের উৎস , নীতি এবং প্রয়োগগুলি উত্তরোত্তর বছরগুলির ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করা উচিত, এটি শীত যুদ্ধের সময় হিসাবেও পরিচিত।  সেই ধারাটিতে যখন বিশ্ব প্রভাব দুটি পরাশক্তি দ্বারা পোলারাইজ করা হয়েছিল: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন।  তাদের প্রভাব উন্নয়ন সহ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে প্রতিটি ক্ষেত্রে পৌঁছেছে।  এই প্রসঙ্গে, পশ্চিমা দেশগুলির রাজনৈতিক বিজ্ঞানী এবং পণ্ডিতদের দ্বারা প্রচারিত আধুনিকীকরণের দৃষ্টান্ত সামাজিক জীবনের প্রতিটি মাত্রায় এতটাই শক্তিশালী এবং এতটাই বিস্তৃত হয়ে উঠল যে এটি "প্রভাবশালী দৃষ্টান্ত" হিসাবেও পরিচিতি লাভ করে।  রজার্স (১৯৬০) এটিকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে "প...

French New Wave in Bengali - ফরাসী নবতরঙ্গ

 ফরাসী নবতরঙ্গ :       ফরাসী নিউ ওয়েভ চলচ্চিত্রগুলি চিরকালের জন্য তৈরি করার পদ্ধতিগুলি পরিবর্তন করেছিল এবং আমাদের  সময়ের সেরা কিছু পরিচালককে প্রভাবিত করেছিল। নিউ ওয়েভ একটি ফরাসি আর্ট ফিল্ম আন্দোলন যা ১৯৫০ এর দশকের শেষদিকে উত্থিত হয়েছিল। এৈতিহ্যবাহী চলচ্চিত্র নির্মাণের সম্মেলনগুলি প্রত্যাখ্যান করাই এই আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ছিল।  নিউ ওয়েভ চলচ্চিত্র নির্মাতারা সম্পাদনা, চাক্ষুষ শৈলী এবং আখ্যান সম্পর্কিত নতুন পদ্ধতির অন্বেষণ করেছিলেন, পাশাপাশি যুগের সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্থাপনের সাথে জড়িত হয়ে প্রায়শই বিড়ম্বনা বা অস্তিত্ববাদী বিষয়গুলির অন্বেষণ করে।  নিউ ওয়েভ প্রায়শই চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী আন্দোলন হিসাবে বিবেচিত হয়। ফরাসী নবতরঙ্গের উৎপত্তি ১৯৪৮ সালের ৩০ শে মার্চ লাক্রানে প্রকাশিত আলেকজান্ড্রে অ্যাস্ট্রিকের ম্যানিফেস্টো "দ্য বার্থ অফ দ্য নিউ  অ্যাভান্ট-গার্ডে: দ্যা ক্যামেরা-স্টাইলো", কিছু ধারণার রূপরেখা প্রকাশ করেছিল যা পরবর্তীতে ফ্রান্সোইস ট্রাফুট  এবং কাহিয়ার্স ডু সিনেমার দ্বারা সম্প্রসারিত হয়েছিল। এটি যুক্তি দেয় যে "চ...